Saturday, December 26, 2015

কারা এবং কেন সহিংসতা করছে?:মোঃ আশরাফুল আলম(সাগর)





বিশ্বজুড়ে হরতাল-বনধ একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ভাষা হলেও বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে এটা একটি উদ্বেগ, আতঙ্ক আর পেট্রোল বোমায় ঝলসানোর প্রতিশব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংবিধান, উচ্চ আদালত এবং আইনের বিভিন্ন ধারা দেখিয়ে ‘মৌলিক অধিকার’ নাম দিয়ে হরতালের ডাক দেওয়া হয়।
‘হরতাল মৌলিক অধিকার। এ অধিকার পালনে কোনো অবস্থাতে অন্য কারো মৌলিক অধিকার খর্ব করতে পারে না। আন্তর্জাতিক ঘোষণাগুলোতে যে সকল মৌলিক অধিকার আছে তা পালন করতে হবে আইনানুগ ও শান্তিপূর্ণভাবে’।‘


মৌলিক অধিকার পালনে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। তবে মৌলিক অধিকার পালন করতে অন্যের অধিকার খর্ব করা যাবে না’। কানাডার দণ্ডবিধিতে রয়েছে, ‘বেআইনিভাবে বা প্রচলিত আইন অমান্য করে যেকোনো মৌলিক অধিকার পালন দণ্ডযোগ্য অপরাধ’।
অস্ট্রেলিয়ান সংবিধানের ২১ ধারা মোতাবেক, ‘অন্যের অধিকার খর্ব করে কেউ তার মৌলিক অধিকার পালন করতে পারবে না’।
আমেরিকা, জার্মানি ভারতসহ সব দেশে এ রকম বিধি-নিষেধ আছে।
বাংলাদেশ সংবিধানের ২৬ থেকে ৪৭ পর্যন্ত অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে সেখানে বলা আছে, ‘জনশৃঙ্খলা ও জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত বাধা নিষেধ সাপেক্ষে মৌলিক অধিকার পালন করা যাবে’।মৌলিক অধিকারের কথা বলে হরতাল ডাকা হলেও বর্তমান সময়ের হরতালে দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারা অমান্য করা হয়। যেমন সহিংসতা ও পিকেটিং ১৪১ ও ১৪৬ ধারা অনুসারে অপরাধ।‘যদি হরতাল আহবান এর সঙ্গে ভয়-ভীতি প্রদর্শন জড়িত থাকে বা হরতাল পালনে কাউকে কোনোভাবে বাধ্য করা হয়, তাহলে হরতাল ডাকা অবৈধ হবে। কারণ সেটা নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করে’।হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে হবে। একাধারে যেমন হরতালের পক্ষে কোনো বেআইনি কাজ করা যাবে না, তেমনি হরতাল পালনের বিরোধী কর্মী দ্বারা হরতালের বিপক্ষে বিরক্তি, উসকানি, হস্তক্ষেপ এবং কোনো ধরনের আগ্রাসন করা যাবে না।তাহলে প্রশ্ন হলো, কারা এবং কেন সহিংসতা করছে? এই বীভৎস সহিংসতা কি গণতান্ত্রিক অধিকার? রাজনৈতিক অধিকার? যেখানে প্রতিদিন সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতেই হবে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রকে প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা দিতে হবে।

No comments:

Post a Comment