Wednesday, December 30, 2015

আপনি আপনার মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকার চাওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু সচেতন?:মোঃ আশরাফুল আলম (সাগর)


বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক গুরুতর অভিযোগ শোনা যায়। কিন্তু সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে কতটা জানেন? এবং অধিকার লঙ্ঘিত হলে তার প্রতিকার চাওয়ার ক্ষেত্রে তারা কতটা সচেতন?মানবাধিকার শব্দটি বাংলাদেশে কমবেশি অনেকের কাছেই পরিচিত। তবে মানবাধিকার বলতে কি বোঝায় সেটি ধারণাটি মূলত দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।অনেকে মনে করেন মানুষ হিসেবে তার যে সেবা পাবার অধিকার আছে সেটাই মানবাধিকার।আবার অনেকে বলছেন রাষ্ট্রের কাছ থেকে তার প্রাপ্য অধিকারকেই তারা মানবাধিকার মনে করেন।কিন্তু পুরোপুরি বিপরীত চিত্র দেখা গেছে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে, যাদের কেউ রিকশাচালক, কেউ বা নির্মাণ-শ্রমিক আবার কেউ রাস্তার ধারের দোকানী তারা বললেন মানবাধিকার সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। 


মানবাধিকার বিষয়ে কেউ তাদেরকে কোনদিন বলেনি বলে জানালেন তারা।বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর গণমাধ্যমে উঠে আসে। এর কোন কোনটি নিয়ে ব্যাপক আলোড়নও তৈরি হয়।গণমাধ্যমে প্রচারণার কারণে দুই একটি ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার উদ্যোগও নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী হয় সেটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অজানা থাকে।অধিকার লঙ্ঘিত হলে কী করতে হবে সে প্রশ্নে পেশায় চাকুরীজীবী একজন বলেন, ''মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে এর কোন প্রতিকার বাংলাদেশে নেই।''তিনি প্রশ্ন তোলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে নিয়ে গেলে এই প্রতিকার কার কাছে চাইবেন?বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন দিক আছে বলে মনে করে মানবাধিকার সংস্থা এবং সচেতন মহল। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা হয়রানি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির সময় সহিংসতার শিকার হওয়া।এছারা পাশাপাশি সরকারি সুবিধা নিতে ঘুষ দেওয়া এসব কিছুকেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। ''সরকারি সুযোগ নিতে যে ঘুষ দিতে হয় তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে,'' বলেন অনেকে। মানবাধিকারের লঙ্ঘন হলে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই এর কোন প্রতিকার চাওয়ার চাইতে নীরবে তা সহ্য করাটাকেই ভালো মনে করেন।কিন্তু কেন এই প্রবণতা? বাস্তবিক কথা এটাই যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে মানুষ যে প্রতিকার চাইতে যায়না তার কয়েকটি কারণ আছে।এর মধ্যে প্রথমত মানুষের মধ্যে একধরনের ভয় কাজ করে, দ্বিতীয়ত মানুষের কাছে তথ্য নেই। মানুষ জানে না কোথায় গেলে এর প্রতিকার পাওয়া যাবে। এছাড়া বিচারের ক্ষেত্রেও দীর্ঘসূত্রিতা মানুষকে নিরুৎসাহিত করে।মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িতরা কোন শাস্তি পায়না। ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে পার পেয়ে যাবার বিশ্বাস বদ্ধমূল হচ্ছে বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মীরা।

No comments:

Post a Comment